পদ্মা _ রুপ ও অরুপের সন্ধান
#Shariar pavel
গঙ্গা থেকে পদ্মা হয়ে কলকাতার 'ইংরেজ সাহেব শেলী' হাজির হলে - জনপদের নাম জুটল শেলীদহ। পদ্মানসীন পদ্মা নদী একদিন বেপরোয়া হয়ে ভেঙে দিল 'শেলীর নীল কুঠির' - শেলীদহ হলো শিলাইদহ।
শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহের জমিদারি এস্টেট দেখতেন বজরায় চড়ে। 'পদ্মা' জমিদারের 'বেপর্দা বোটে' চেপে কখনো 'গড়াই' কখনো বা 'কুমার নদ' নামে নাম নিত। এই বহুরুপী পদ্মা কখনো হোত 'কালীগঙ্গা' ' কখনো বা ডাকাত ভাইয়াদের 'ডাকুয়া খাল'। তৎকালীন সময়ে এসব নদীতে পেত্নীর আনাগোনা শোনা যায় জমিদার রবি বাবুকে ঘিরে। পদ্মায় বজরার চলাচল চলতে থাকে 'কুষ্টিয়ার কুঠিবাড়ি আর কোলকাতার জমিদারবাড়ি' কখনো বা শান্তিনিকেতন - একে একে জন্ম নেয় 'স্ত্রীর পত্রের 'বিন্দু' কিংবা শেষের কবিতার 'লাবণ্য' - নষ্টনীড়ে’র চারুলতা, ‘ঘরে-বাইরে’র বিমলা, ‘চোখের বালি’র বিনোদিনী, নিরুপমা, হৈমন্তী, মৃণাল, কল্যাণী, অনিলা...
কাদম্বরী বৌদি বিযোগে একাকীত্বের অশ্রুজলে রবীন্দ্রনাথের 'শ্রী' যায় মুছে। শ্রী হীন রবীন্দ্রনাথ আজও একলা থাকেন অশ্রু নদীর সুদূর পানে…
এই অদ্ভুত ভুতুরে কালিগঙ্গায় ভেসে আসেন গুটিবসন্ত রোগী লালন সাঁই। তার মা ছিলেন তার বয়সে ছোট - পাশাপাশি শায়িত আজও। লালন দর্শনে একদিন আমেরিকান কবি এলেন গিন্সবার্গ আফটার লালন (After Lalon) নামে একটি কবিতাও রচনা করেন। ১১৬ বছর বয়সে ১৭ অক্টোবর সেই কালী নদীর ধারে ভোর ৫টা পর্যন্ত গান-বাজনা শেষ করে তাঁর শিষ্যদের বলেন, “আমি চলিলাম”...
সাঁইজির জন্ম ও মৃত্যু দুদিনই বড় রহস্যময় (১৭ অক্টোবর, ১৭৭৪ - ১৭ অক্টোবর, ১৮৯০) - দোল পুর্নিমা আলোয় আলোকিত..
এই পদ্মার পাড়ে ইংরেজি শিক্ষিত বাবু হরিনাথ মজুমদার প্রেসের ব্যবসা আর মহিলা স্কুলে মাস্টারি ছেড়ে নাম নেন 'কাঙ্গাল হরিনাথ' - গড়ে তুলেন 'চাঁদের দল নামে গানের দল - পরবর্তীতে 'সাহেব' হয়ে উঠেন ফকির চাঁদ বাউল।
গঙ্গাশ্রী 'শ্রী হারিয়ে গঙ্গা' পরবর্তীতে পদ্মায় পড়েছে ; এবছর তাই মাছ মারা; গোসল স্নান ও পানি পান বারন..
শতশত বছরের উত্তাল পদ্মা আজ শান্ত; করনায় আক্রান্ত..
পদ্মা 'অ্যা প্যারাডাইস লস্ট টুওয়ার্ডস প্যারাডাইস'
১৫ জুন ২০২১
No comments:
Post a Comment
Thank u very much