Saturday, August 14, 2021

সাহিল রহমানের লেখা গল্প "সেটেল ম্যারিজ

 


সেটেল ম্যারিজ

----------✒️📝সাহিল রহমান

একটা লম্বা ঘোমটা দিয়ে বিছানায় বসে আছে তুলি, লাল একটা শাড়ি পড়েছে সে, শাড়িটা এমন ভাবে পড়েছে যে তুলির চেহারা দেখতে পাবার কোন উপায় নেই, দেখার মধ্যে শুধু তার ফর্সা হাত দুটি দেখা যাচ্ছে, ভর্তি কাচের চুড়ি সম্বলিত দুটো হাত। তুলি সুন্দর করে এক হাত অন্যটির উপর রেখে চুপ করে অপেক্ষা করছে।


তুলির জামাই ঘরে ঢুকতেই একটা ধাক্কা খেল, “হায় খোদা এটা কে?” 

কিছুক্ষণ আগেই রিসিপশনের অনুষ্ঠান শেষে তুলিকে নিয়ে ওদের বাড়ি ফিরেছে আলভী, তখন তার পড়নে ছিল একটা পারপেল কালারের লেহেঙ্গা। তুলির বাবা-মায়ের সাথে আলভীর কথা বলতে বেশী জোর ত্রিশ মিনিট লেগেছে, তুলি তো তখনও ওই লেহেঙ্গাটাই পড়ে ছিল। তাহলে টকটকে লাল শাড়ি পড়ে বিছানায় কে বসে আছে? কেন জানি হুট করেই গলা শুকিয়ে গেল আলভীর। আলভী শুকনো গলায় ডাকল, “তুলি... তুলি...”


আলভীর কথার কোন উত্তর আসল না, মেয়েটি একদম মূর্তির মতন বসে আছে, কোন নড়াচড়া নেই।

“ব্যাপার কি?” কিছুই বুঝতে পারছে না আলভী। আলভী এক দুই পা করে বিছানার সামনে গিয়ে দাঁড়াল, তারপর একবার বসার চিন্তা করেও বসল না, সামান্য ঝুঁকে ঘোমটার ভেতর দিয়ে চেহারা দেখার চেষ্টা করল, কিন্তু কিছুই দেখতে পেল না সে। এমন সময় আলভী আবিষ্কার করল ঘোমটা সরিয়ে মেয়েটার মুখটা দেখতে ইচ্ছে করছে তার, শুধু ইচ্ছে না প্রচণ্ড ইচ্ছে করছে। দুই তিন বার নিজের হাত ঘোমটার দিকে বাড়াল আলভী, আবার সরিয়ে নিল মনের অজান্তেই, শেষ পর্যন্ত হাজার সংশয় নিয়ে আলভী ঘোমটায় হাত দিতেই খপ করে আলভীর হাত ধরে ফেলল তুলি, সঙ্গে সঙ্গে বিরাট ভ্যাবাচেকা খেয়ে বসল আলভী। 

সেই সাথে বেশ কয়েকজন মানুষের “হো হো” চিৎকারে কানে তব্দা বেধে গেল সবার, কিছুক্ষণ পরেই আলভী লক্ষ্য করল তুলি ঘোমটা সরিয়ে আলভীর হাত ধরে আছে আর হাসছে, তুলির বান্ধবী সহ বাড়ির আরও কয়েকজন হেসে কুটিকুটি হচ্ছে, যারা এতটা সময় ধরে লুকিয়ে ছিল আশেপাশে। 

এই বিষয়টিতে সবাই খুব আনন্দ পেলেও তেমন একটা আনন্দ পেল না আলভী, বরং নিজেকে কেমন বোকা মনে হল তার, যদিও আলভী সবার সাথে তাল মিলিয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী হাসতে থাকল। 


~


“আপনি কি ভয় পেয়েছেন?” এবার শাড়ী গহনা খুলে একদম সাধারণ পোশাকে আলভীর সামনে বসেছে তুলি, মুখে এখনো হাসি ভাব শেষ হয়নি তার, তখনের সেই আনন্দের রেশ এখনো তুলির মধ্যে বিরাজমান। 

আলভী মাথা নেড়ে বলল, “হুম একটু ভয় পেয়েছি”

আলভীর কথাটা শুনে তুলির আনন্দ যেন  আরও দিগুণ হয়ে গেল, তুলি হাসতে হাসতে বলল, “কি যে তাড়াহুড়ো করে লেহেঙ্গা চেঞ্জ করে শাড়ী পড়েছি কি বলব!” 

তুলির কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে তার বেশ আগে থেকেই এই পরিকল্পনা ছিল, আর এটা করতে পেরে সে মহা খুশী।

যদিও তুলির এই আনন্দের সাথে খুব একটা তাল মেলাতে পারল না আলভী, আড়চোখে ঘড়ির দিকে তাকাল সে, রাত দুটা বাজতে চলেছে, চোখ ভেঙ্গে ঘুম আসছে তার।


মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে তুলির সাথে বিয়ে হয়েছে আলভীর, মেয়ে দেখার পর পছন্দ হওয়া, এই শেষ। এরপর থেকে শুধুই বিয়ের আয়োজন। বিয়ের সব আয়োজন নিয়ে তুলিও ভীষণ ব্যাস্ত ছিল, এরমধ্যে আলভীর সাথে তিন দিন শপিংএ গেছে তুলি, ওই সময় দুজন টুকটাক কথা বলেছে, এছাড়া আর তেমন কথা হয়নি দুজনের মাঝে। আলভী যে তুলির সাথে কথা বলার চেষ্টা করেনি তা নয়, বেশ কয়েকবারই কথা বলার জন্য চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোন বারই ঠিক মতন কথা হয় নি। তুলির সাথে আলভীর যতবার কথা হয়েছে ততবারই তুলি বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করেছে। বিয়ের আয়জন আর বিয়ের প্রোগ্রাম নিয়ে তুলির সেই রকম সয়লব অবস্থা, প্রায় দশ বারোটা প্রোগ্রাম, প্রতিটা প্রোগ্রামের এত এত লোকজন, ফটোগ্রাফার, স্টেজ, ম্যাচিং ড্রেস আরও কত কি? এসব আলোচনা নিয়ে বেশী কথা বলতে ইচ্ছে করে না আলভীর, তাই কথাও আগায় নি তেমন।


~


আলভীর চোখ কয়েকবার লেগে আসল, ঝিমুনি গ্রাস করে ফেলেছে ওকে, মাথার নিচে দেবার জন্য বিছানা থেকে বালিশ টেনে নিল আলভী, এমন সময় তুলির কথায় চোখ মেলল সে, 

“ওমা আপনি কি ঘুমাতে যাচ্ছেন নাকি? মাত্র তো রাত দুটা বাজে, এখনো কত কাজ বাকী!” তুলির এই কথায় এবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল আলভীর, এখনো আরও প্রোগ্রাম বাকী আছে নাকি? 


“আজ আমাদের গল্প করার রাত, বিয়ের সব কিছু ম্যানেজ করতে গিয়ে আপনার সাথে গল্পই করতে পারিনি, আজকে থেকে গল্প শুরু, প্রথমে আপনি বলবেন তারপর আমি, ওকে।” তুলির কথাটা শুনে এবার চোখ মেল তাকাল আলভী, লক্ষ্য করল মেয়েটার মধ্যে একটা এমন একটা মনোভাব আছে যে সে যেটা চাইবে সেটাই হবে, অনেকটা ছোট বাচ্চাদের মতন। তুলির দিকে এবার আরও লক্ষ্য করে তাকাল আলভী, প্রথম দেখা দেখির সময়ের পর এই দ্বিতীয় বার ভাল করে তুলিকে ঠিক মতন দেখল সে।


“এবার বলেন আমাকে কেন পছন্দ করলেন?” তুলির সেই একই ধরণের ভাবান্তরহীন প্রশ্ন,

“আপনাকে ভাল লেগে গেছে তাই” প্রশ্নের উত্তরটা এক কথায় দিল আলভী, যদিও এই প্রশ্নটা আলভীর তুলিকে করা উচিৎ ছিল। সার্টিফিকেটের বয়সে তুলি আলভীর থেকে ১৩ বছরের ছোট, সার্টিফিকেট অনুযায়ী তুলির বয়স ২৫, আর আলভীর ৩৮, সেই দিক থেকে তুলির আলভীকে ভাল লাগাটাই অধিক বেমানান।


“আচ্ছা, এবার বলেন কয়টা প্রেম করেছেন?” কথাটা বলার সময় চোখ দুটো সরু করে ফেলল তুলি, ভাবটা এমন খুব সিরিয়াস কিছু শুনতে যাচ্ছে সে,

“একটাও না” নিরস উত্তর করল আলভী,

“কি বলেন, ভাল লাগার মতন কেউ ছিল না, এটা কি করে সম্ভব!” খুব জোর গলায় কথাটা বলল তুলি, তুলির কথায় মুচকি হাসল আলভী, কিন্তু মনের মধ্যে একটা চিনচিন কষ্ট অনুভব করল সে, যেই কষ্টটা দুনিয়ার কাছে বেমানান হলেও আলভীর কাছে নিখাদ একটি যন্ত্রণা। 


~


দশ বছর আগের স্মৃতি কিন্তু আলভী এখনো সেটা পরিষ্কার মনে করতে পারে। 

নীল শাড়ী পরিহিত একটি মেয়ে ঠিক আলভীর সরাসরি সামনে বসে ছিল, মেয়েটি ঠায় তাকিয়ে ছিল মাটির দিকে, আলভী বারবার আর চোখে তাকাচ্ছিল তার দিকে। হঠাৎ আলভীর মামী বললেন, ওরা দুজন একটু আলাদা কথা বলুক, আমরা অন্য ঘরে যাই? 

কথাটা বলতেই হুড়মুড় করে সবাই উঠে গেল অন্য ঘরে, রয়ে গেল শুধু আলভী আর নীল শাড়ি পরিহিত মেয়েটি। সেদিন সেই সময় কেমন যেন অন্য রকম একটি অনুভূতি হয়েছিল আলভীর, যেটা আলভী ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না। অনেকটা সময় নিশ্ছুপ থাকার পর হালকা করে গলা খাকাল আলভী, আলভীর গলার শব্দে একনজর চোখ তুলে তার দিকে তাকাল মেয়েটি, তারপর মুহূর্তেই আবার মাটির দিকে চোখ ফিরিয়ে নিল সে। কিন্তু মেয়েটির সেই দৃষ্টি যেন আলভীর হৃদয়ের মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছিল, মুহূর্তের মধ্যে বুকের ভেতর ধড়ফড় শুরু হয়ে গিয়েছিল তার।


সিভিতে মেয়েটির নাম লেখা ছিল, কিন্তু সেটা কোন ভাবেই মনে করতে পারল না আলভী, এই কিছুক্ষণ আগেও তো মনে ছিল, কিন্তু এখন বেমালুম ভুলে গেছে সে। কি বলবে আলভী, কিছুই যেন মাথায় আসছে না তার। 


“আপনি কি একদমই কম কথা বলেন?” অনেকক্ষণ চিন্তা করার পর এমন একটা উদ্ভট প্রশ্ন করে বসেছিল আলভী, যদিও এই উদ্ভট প্রশ্নে কাজ হয়েছিল, এখান থেকেই শুরু হয়েছিল আলভী আর স্মৃতির কথার সূত্রপাত ! 


সেদিন দুজনের মধ্যে সামান্য কিছু কথা, কয়েকবার চোখে চোখ পড়া, অল্প সময়ের আলাপ আলভীর মন জুড়ে ছিল, আলভীর মনই তাকে বলে দিচ্ছিল এই মেয়েটিকে আলভীর ভাল লেগেছে, ভাল লাগা এমনই একটি বিষয় যেটা বুঝতে সময় লাগে না, নিজের মনই বলে দেয় সেটা।


~


প্রেম করার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি আলভীর, তাই বেশ ঝড় পোহাতে হয়েছে তাকে ও তার পরিবারকে, স্মৃতিকে প্রথম দেখায় আলভীর পছন্দ হওয়াতে বেশ খুশী ছিল আলভীর পরিবার, তাই খুব বেশী দেড়িও করতে চায়নি তারাও। দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের কথা বার্তা বেশ তোরেজোড়ে শুরু হয়েছিল সেই সময়। 


ওইদিকে আলভীর সাথে স্মৃতির সম্পর্কটাও আগাচ্ছিল সুন্দর, সকাল ৮ টায় অফিসের জন্য বের হতে হলেও রাত ২ টা পর্যন্ত স্মৃতির সাথে কথা বলত আলভী। ছুটির দিন সুযোগ পেলেই দুজন কফি খেতে চলে আসত। সেদিনের চুপ করে বসে থাকা মেয়েটি ঠিক চুপ করেই আলভীর হৃদয়ে অনেকটা জায়গা করে নিয়েছিল।


~


বিয়ের কথা আর দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্কটা খুব ভাল মতন এগুচ্ছিল কিন্তু একদিন আলভী অফিস থেকে বাসায় ফিরতেই লক্ষ্য করল বাড়ির সবাই গম্ভীর হয়ে বসে আছে সামনের ঘরে, সবার মধ্যে একটি চিন্তিত ভাব। কাধ থেকে ব্যাগ রেখে আলভী খালি সোফায় বসতে বসতে বলল, “কি ব্যাপার? কোন সমস্যা নাকি?”


প্রশ্নের উত্তরে আলভী যেটা শুনল তা হল,

“তোমার হবু শ্বশুর বাড়ি থেকে বিশ লক্ষ্য টাকা কাবিন করতে বলেছেন, এর কমে কোন ভাবেই কাবিন করবেন না তারা”

বিশ লক্ষ্য টাকা কাবিন! এটা তো অনেক, মাত্র দুই বছর হয় চাকরিতে ঢুকেছে আলভী, এত টাকা কাবিন করার সামর্থ্য তো আলভীর আসলেই নেই। কিন্তু আলভীর বাবার কথা শুনে যেটা বোঝা গেল, এই বিষয়ে মেয়ের পরিবার খুবই শক্ত, মেয়ের মান-সম্মানের বিষয় এটা, বিশ লাখের নিচে কাবিন করলে নাকি ওদের মান সম্মান থাকবে না!


স্মৃতির সাথে এই নিয়ে সেদিন রাতে কথা বলেছিল আলভী, কাবিনটা যে ছেলের সামর্থ্যের উপর হওয়া উচিৎ এই কথাটা বোঝাতে সেদিন অক্ষম হয়েছিল আলভী, এই বিষয়ে পরিবারের সিধান্তই শেষ সিধান্ত সেটা বলেছিল স্মৃতি, কাবিনের টাকা তো আর দেয়া লাগছে না, তো বিশ লাখ টাকা কাবিন করলে কি সমস্যা। 


বিষয়টা নিয়ে আলভী আর তার পরিবার আর ঘাটায় নি, রাজি হয়ে ছিল এই সিধান্তে, কিন্তু এই সম্মতিতে শেষ রক্ষা হয়নি। বিয়ের কেনা-কাটা, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা, মেয়ের কস্মেটিক্স, শাড়ী সকল বিষয় নিয়ে হিমশিম খাবার অবস্থা হয়ে পড়ল আলভীর, আর তখনই লাগাম টানার সিধান্ত নিইয়েছিল আলভী ও তার পরিবার। ওদের অবশ্যই ছেলের সামর্থ্য সম্পর্কে বুঝতে হবে। আলভীরা তো গুলশান বনানীর কোটি পতির মেয়ে ঠিক করেনি, নিজেদের মতনই মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়েকে পছন্দ করেছে, কিন্তু ওদের সব কিছুইতে তো উচ্চাখাঙ্খি কথা বার্তা!


সেই লাগাম টানার বিষয়টিও ভাল চোখে নিতে পারেন নি ওরা, হুট করেই সুন্দর সম্পর্কে একটি তিক্ততা চলে এসেছিল সেদিনের পর, আর এই তিক্ততার জেরে শেষ পর্যন্ত বিয়ে ভাঙ্গা। যদিও আলভী অনেক চেষ্টা করেছিল বিয়েটা টেকানোর যদিও সেটা হয়নি শেষ পর্যন্ত। আলভী স্মৃতির পরিবারের সাথে কথা বলেছিল কয়েকবার, কিন্তু ওদের তোপের মুখে আর কোন কথা বলার সুযোগ পায়নি আলভী।

“তোমার এখনই যদি এগুলো নিয়ে সমস্যা হয়, তাহলে আমাদের বুঝতে হবে তুমি আসলে অক্ষম” এমন একটি কথায় একেবারে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল আলভী। 


অন্য কেউ হলে হয়ত ওখানেই থেমে যেত, কিন্তু মন থেকে স্মৃতিকে ভুলতে পারছিল না আলভী, তাই একদিন স্মৃতির সাথে দেখা করতে গিয়েছিল, যদি দুজন মিলে কিছু একটা বন্দোবস্ত করতে পারে, যদি সম্পর্কটা ঠিক হয়, কিন্তু সেদিন স্মৃতির কথা শুনে আলভী মন থেকেই ভেঙ্গে পড়েছিল, 

“আমি সেটেল ম্যারিজ করছি একজন এস্টাবলিস্ট ছেলেকে বিয়ে করার জন্য!” স্মৃতির এই কথাটা শোনার পর আর একটিও কথা বলেনি আলভী, এই বিয়ে টেকানোর জন্য আর কোন চেষ্টাও করেনি সে। শুধু অনুধাবন করেছিল ৩০ হাজার টাকা বেতন আলসে বিয়ে করার জন্য উপযুক্ত কোন বেতন না, এস্টাবলিস্ট হতে আজও অনেকটা সময় বাকী আছে তার! 


~


সেদিনের পর ১০ টা বছর কেটে গেছে আলভীর এস্টাবলিস্ট হতে হতে, ২৮ বছরের আলভীর বয়স আজ ৩৮ বছর। 

আজ সব কিছু সম্পন্ন করে তুলিকে বিয়ে করছে আলভী, কোন কিছুইতেই কোন কার্পণ্য করেনি, বরং প্রয়োজনের থেকে বেশী করা হয়েছে। সেদিন স্মৃতির চোখে যেই তাচ্ছিল্য ছিল আজ তুলির চোখে সেই তাচ্ছিল্য একদম নেই। 

আলভী তুলির চোখের দিকে তাকিয়ে তুলিকে পাল্টা প্রশ্ন করল “তুমি আমাকে পছন্দ করলে কেন?”


“আপনি এস্টাবলিস্ট আর …” কথার মাঝেই হেসে ফেলল আলভী, আলভীর হাসিতে সামান্য অপ্রস্তুত হয়ে গেল তুলি, যদিও সেই দিকে দেখার কোন প্রয়োজন বোধ করল না আলভী। মাথার নিচে বালিশটা দিয়ে বলল, 

“আমি অনেক টায়ার্ড, আমার অনেক ঘুম এসেছে, কাল সকালে কথা হবে” এটুকু বলেই চোখ বুজল আলভী, একটা সময় তুলির মতন বিয়ের দিন রাতে সারা রাত গল্প করে কাটানোর পরিকল্পনা আলভীরও ছিল, কিন্তু সেই উত্তেজনা সেই স্পৃহা এখন আর কাজ করে না, সেই বয়সটাও এখন নেই, সেই মায়া হারিয়ে গেছে অনেক আগেই, আলভীর মাথায় এখন কোটি কোটি টাকার হিসেবটাই বেশী শোভা পায়, এসব এখন আলভীর কাছে নিতান্তই বাচ্চামি!



No comments:

Post a Comment

Thank u very much