Sunday, June 19, 2022

সুলতান নীলের লেখা গিতীকাব্য

 গানঃ ৩


তুমি বললেই নীলাকাশটা খেয়ে নেবে সাদা রঙ,

তুমি বললেই অবোধের শিকলে ধরে যাবে ঠিক জঙ। 

তুমি বললেই অষ্টপ্রহর শুধু সুখ স্বপ্নের বেচাকেনা,

তুমি বললেই প্রেমিকের ঠোঁটে ঋণ খেলাপের দেনা।

/

তুমি আমার ক্রোধের আগুনে বিষন্ন কবিতা,

তুমি আমার ক্ষুধা পেটে গেলা দুপুরের সবিতা। 


তুমি হাসলেই চাঁদের শরীরে সাদা গোলাপের চাষ, 

তুমি হাসলেই আমার কবিতা উড়ন্ত বালিহাঁস।

তুমি হাসলেই শহরের বুকে সুবোধের চরাচর,

তুমি হাসলেই ব্রোথেলে ব্রোথেলে সংসার বাঁধে ঘর।

/

তুমি আমার ভুলের কার্পাসে বোনা বিপন্ন কবিতা,

তুমি আমার মানসীতে ডোবা অভিমানী সবিতা। 


তুমি চাইলেই মাঠের সবুজে সুবর্ণের ব্যঞ্জনা,

তুমি চাইলেই বেলকনিতে ফুল হাতে রঞ্জনা।

তুমি চাইলেই পুঁজিবাদীরা কিটস্ এর ফেরিওয়ালা,

তুমি চাইলেই অবাধ্য গনিকারা গোছানো বধূবালা।

/

তুমি আমার এক জীবনের লেখা সমস্ত কবিতা, 

তুমি আমার আশার বেসাতিতে মেঘে ঢাকা সবিতা। 

*********************************************


© সুলতান নীল

Monday, June 13, 2022

কবি লিটন আব্বাসের লেখা কবিতা *শংসাবচন*

 




শংসাবচন

✒️✒️লিটন আব্বাস


এবার আষাঢ়?

আগুর!


বায়নার আগাম উসুলে

সমানে ভিজিয়ে যাবে ধারাপাত


এতোকিছুর পরও হারানো গৌরব

সমকালীন রৌরবে---

শোনা যাবে না হয়তো 

ব্যাঙের 'ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর'!


বিঁচি কলাগাছ, নারিকেল গাছে ফলন কম

তাই বরবাদের আশংকায় নকশিবালিশে দরপতনের গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেলো

কোলাব্যাঙ! 


ঘুম থেকে উঠে দেখে 

জানলায় লাগানো দামী পর্দাগুলো

বৃষ্টির ছিটেফোটায়

ফারদা ফাই হয়ে গেছে।


ঘরে দাওয়ায় লুকিয়ে থাকা কুনো

অতিমারীর কোপে গিফট পাওয়া 

সাতষট্টি ইঞ্চি এলইডি স্মার্টটিভিতে

ইউরোর জমালো ফুটবলরণন দেখে


অগাধ অবসর! কানামেঘির বায়োস্কোপে

খুব একটা মন দাগে না সোনা ব্যাঙের


সকল ব্যাঙেরা ঐক্যবদ্ধ

হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিতেও

তাদের আর ডাকতে কিম্বা

ঘ্যানঘ্যান আওয়াজ তুলতে 

ভীষণ ইস্যু হয়ে গেছে;

তাদেরও দাবী আছে,

তাহারা নাকি উপেক্ষিত, 

ইশতেহারে ক্লিয়ার করে তাদের অস্তিত্বের অবস্থান পাকাপোক্ত করা নেই!

তাই,

যতোই নান্দীপাঠ করো না ক্যান---

'ঘ্যাঙর-ঘ্যাঙর' ঐতিহ্যিক এই শংসাবচন

আর শুনতে পাবে না কালেভদ্রেও---কারণ,

জুন আসা মানেই খুন আসে

প্লাবনে মন, বন, উনন, স্বপ্ন সব ভাসে।



২০২১/

Friday, June 10, 2022

কবি সুলতান নীলের কবিতা বৈশিষ্ট্যের মুখে এ্যালার্জি ঝোলানো

 বৈশিষ্ট্যের মুখে এ্যালার্জি ঝোলানো




প্রেমিক একটি শব্দসন্নিবেশ, এতে উহ্যভাবে পাগলামিসহ আরও বেশ কয়েকটি খোট্টামোট্টা শব্দের সন্নিবেশ থাকে। 

তবে প্রেমিক শব্দসন্নিবেশ থেকে উহ্যভাবে থাকা পাগলামি অংশটিকে সরিয়ে নিলে যা অবশিষ্ট থাকে তা হলো স্বামী,

স্বামী একটি চরম পুরুষতান্ত্রিক শব্দ যা কিচেনে তোমার নাকের ডগায় জমে থাকা হিরের মত মূল্যবান ঘামকে অবলীলায় অস্বীকার করবে এবং স্বামীসেবা নামক সামাজিকতা ও ধর্মান্ধতার বাটখারা দিয়ে মাপবে। 


কবিতাকে যদি আমাদের মত বাহ্যিকরুপে রুপায়িত করা যেত তাহলে তোমার নাম হতো, উত্তরাধুনিক কবিতা।

কবির কলমে তুমি যখন উত্তরাধুনিক কবিতা তখন ধর্মান্ধতা তোমার কাছে এ্যালার্জি,  এটা তোমার স্বাভাবিকতা নয়,  মনে রেখো এটা তোমার বৈশিষ্ট্য। 


অথচ বৈশিষ্ট্যের মুখে এ্যালার্জি ঝুলিয়ে কি দারুণ মায়াপ্রবঞ্চনায়, 

তোমার হৃদয়ের প্রবেশপথে ঢাউস সাইনবোর্ডে বড় বড় হরফে লেখা থাকে, 'এটা গরু ও ছাগলের সংরক্ষিত বিচরণক্ষেত্র, পাগল প্রবেশ নিষিদ্ধ '। 


© সুলতান নীল 


২৭ মে, ২০২২ইং 

মিরপুর, ঢাকা।

আহমেদ রাজিবের লেখা কবিতা *তুমি আমার*

তুমি আমার



✒️✒️আহমেদ রাজিব

 এখনও আগের মত ভাবি তোমাকে, 

এখনও স্বপ্ন বুনি আঁধারে বসে।

এখনও রাত জাগি ভোরের অপেক্ষায়-

এখনও চাঁদ সেই জোছনা বিলায়।

এখনও তুমি সেই আগের তুমিটাই-

দূরত্বের বেড়াজালে বন্দী বুক-পিঞ্জিরায়।


এখনও আকাশ বলে তুমি আমার-

এখনও সাগর জলে চোখ নদী ভিজে বারেবার।

এখনও ভাঙা-গড়ার অভিমান ঝরে,

এখনও কষ্ট গুলো পুষে রেখেছি গোপনে।

এখনও মন বলে তুমি আমার-

আসলে বাস্তবতায় গল্পের চিত্রনাট্যের বিরাট রদ-বদল।


এখনও ফাগুন আসে বসন্ত ছুঁয়ে-

এখনও শরৎ নামে ধূসর কাঁশবনে।

এখনও ভিজেও কদম আষাঢ়-শ্রাবণে,

এখনও হৃদয় ফাঁটে চৈত্রের দাবদাহে।

এখনও আকাশ কাঁদে,কাঁদো না তুমি

তোমার ঐ চোখের জল এতই কি দামি?

Sunday, June 5, 2022

কবি খন্দকার উল্লাসের লেখা কবিতা নিষিদ্ধ শহর

 

খন্দকার উল্লাস 

নিষিদ্ধ শহর

✒️✒️খন্দকার উল্লাস

গোলক ধাঁধার অন্ধগলির পথগুলোতে,

নিষিদ্ধ স্বপ্নের কেনাবেচা চলে।

ঘৃণ্য জগতের হয় আনাগোনা,

অগোচরে কুকর্মের পসরা সাজায় ভিন্ন জগতের দোকানীরা।

পতিতার শরীর যেখানে উৎকৃষ্ট পণ্য।


অন্ধগলির বাসিন্দারা কি তবে অন্ধকারে এসেছিল ধরণীতে,

তাদের স্বপ্নগুলো কি নিষিদ্ধ ছিল?

সুন্দর মনুষত্ব বহনে তারা হয়তোবা ভূমিষ্ঠ কোন কোমল মৃত্তিকায়।

বৈষম্য তাদের করেছে ভিন্ন,

ক্ষুধা নামক আর্তনাদের জন্য।


---

কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক রকিবুল হাসান

কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক রকিবুল হাসান।

রকিবুল হাসান



কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক রকিবুল হাসান। তিনি ১৯৬৮ সালের ৩১ মে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহা. উকিল উদ্দিন শেখ। মাতা পরীজান নেছা। পেশায় শিক্ষক। নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও গবেষণা অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের প্রধান। তিনি এর আগে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ও উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (অনার্স), এমএ ও পিএইচডি করেছেন।


প্রকাশিত গ্রন্থ:

গবেষণা-গ্রন্থ: সাহিত্যের নন্দনচর্যা, পঞ্চাশের সাহিত্যে জনপ্রিয় যুবরাজ, ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার ও ফোকলোর, বাংলা জনপ্রিয় উপন্যাসের ধারা: মীর মশাররফ হোসেন থেকে আকবর হোসেন, বিপ্লবী বাঘা যতীন, আকবর হোসেনের কথাসাহিত্য: রূপলোক ও শিল্পসিদ্ধি, কয়ায় রবীন্দ্রনাথ, বাঘা যতীন ও প্রাজ্ঞজন।


প্রবন্ধ গ্রন্থ: গড়াই নদীর পাড়, পথে যেতে যেতে, পথের কথা, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম, প্রবন্ধ প্রমূর্ত: ভিতর বাহির, রবীন্দ্রনাথ ও বাঘা যতীন।


উপন্যাস: জীবন দিয়ে ভালোবাসি, এ কী তৃষ্ণা এ কী দাহ, নবীরন, ভাঙন, ছায়াবন্দি, অহনাবউ।


গল্পগ্রন্থ: মেয়েটির চোখে শিশির জমেছিল, প্রেমের বেলা নেই।


কাব্যগ্রন্থ: অনিয়ম চুম্বনের সিঁড়ি ধরে, এক ধরনের অহংকার, দুঃখময়ী শ্যামবর্ণ রাত, দেবতীদেউল, রহস্যস্বাক্ষর, রকিবুল হাসানের প্রেমের কবিতা, ব্যর্থ ভয়ঙ্কর দৌড়ের কাছে, স্বদেশলক্ষ্মীর তিমিররাত্রি, (যৌথ), ধুলোমাটির ঘ্রাণ।


সাক্ষাৎকারভিত্তিক গ্রন্থ: ইন্টারভিউ।


সম্পাদিত গ্রন্থ: বিমূঢ় বিস্ময় জীবনানন্দ দাশ (যৌথ) সহ ১৩টি।


২০২২ সালের বই মেলাতে প্রকাশিত হয়েছে উপন্যাস  অগ্নিকা আঁধার ও জলের গোপন গল্প, কবিতা সংগ্রহ,এবং যৌবনটাই জীবন নয় সম্পাদিত গ্রণ্হ।

সম্পাদিত পত্রিকা: সাপ্তাহিক অর্থবিত্ত ২২ বছর ধরে সম্পাদনা করছেন। পিআররিভিউ জার্নাল ‘গবেষণা সাময়িকী (১-৪) সংখ্যা সম্পাদনা করেছেন। এনইউবি বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি গবেষণা পত্রিকার সম্পাদক। সাহিত্যের অনিয়মিত কাগজ গৈরিক, একক, কলরব ও সংগতির সম্পাদক।


পুরস্কার:

বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব সাহিত্য সম্মাননা ২০২০। শ্রীপুর সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯, শ্রীপুর, গাজীপুর। কবি ওমর আলী স্বর্ণপদক ২০১৮, পাবনা। লালন সাঁই পুরস্কার-২০১৫, লালন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, ঢাকা। বাংলা সাহিত্য পদক-২০০৬, পাবনা। স্যার সলিমুল্লাহ পদক-২০০৬, ঢাকা। দ্য সান সম্মাননা-২০১০, ঢাকা। চাইল্ড হেভেন সম্মাননা-২০১০, কুষ্টিয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদ সম্মাননা-২০১১, কুমারখালী, কুষ্টিয়া। সিটি স্কুল সম্মাননা-২০১৫, ঢাকা।


মূল্যায়ন


১.

‘নতুন কালে কি সত্যি নতুন মানুষ দেখা যায়? এত নতুন যে তাকে আর চিনতেই পারা যায় না? মানুষ কি বদলে যাচ্ছে? বদলে কি যায়? যে যুবক যুবতীদের পরিবর্তনের রকমারি পোশাকে দেখতে পাই সেই পোশাক সরালেই তো দেখা যায় চিরকালের সেই যুবক যুবতী। রকিবের উপন্যাস পড়তে গিয়ে এই কথাগুলিই আবার মনে এল। দু’জোড়া যুবক যুবতীর গল্প এখানে। প্রথা তারা এতদূর ভাঙতে পারে যে হঠাৎ মনে হয় একালের যুবক যুবতী খুব বদলে গেছে। স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হলে প্রেমসহ বা প্রেমবিনাই ভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক যেমন স্থাপিত হয় তেমনই আবার বিয়ে সামাজিক পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই প্রেমিকার গর্ভে সন্তান চলে আসে। মনে হয় সময় বদলেছে, মূল্যবোধ বদলেছে। প্রথা ভাঙা চলছে কিন্তু একটু ভেতরে ঢুকেই বুঝতে পারি একই চিরন্ততা এ কালের তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও নির্বাধ বয়ে যাচ্ছে।

রকিবুল হাসানের এই উপন্যাস যেমন বর্তমানের সমাজকে চেনায়, রাষ্ট্রকে চেনায় তেমনই নতুন মানুষকেও চেনায়।

(ভাঙন: হাসান আজিজুল হক)


২.

রকিবুল জীবনকে খাঁটিভাবে দেখেছেন। তাঁর প্রতিটি কবিতা সম্পূর্ণ ও আমেজময়।গোট কবিতা একটি প্রচ্ছন্ন কাহিনী তুলে ধরে। সমাজের নারী হত্যা, ভালোবাসার ব্যর্থতা ও হাহুতাশ রকিবুল হাসানের কবিতার উপজীব্য বিষয়। তিনি নিসর্গকে দেখেছেন এবং তাঁর কল্পনা শক্তি প্রখর। তাঁর কবিতা কোমলভাবে আমাদের মনকে নাড়া দেয়।… রকিবুল হাসানের মতো আমাদের আরেকজন কবির কথা মনে পড়ছে, তিনি আবুল হাসান। রকিবুল হাসানও তাঁর মতো মিষ্টি কবিতা লেখেন। তাঁর কবিতার বাক চাতুর্য মুগ্ধ করে।

(অনিয়ম চুম্বনের সিঁড়ি ধরে: ওমর আলী)


৩.

রকিবুল হাসানের ‘পথের কথা’ গ্রন্থের প্রত্যেকটি লেখা যদি চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করা যায়Ñতাহলেও দেখা যাবে এই গ্রন্থটি লেখকের এক ভিন্নমাত্রিক সৃষ্টি। বাংলা সাহিত্যে এই গ্রন্থটিকে এক ভিন্নমাত্রিক অনন্য সংযোজন হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

(পথের কথা: ভিন্ন আঙ্গিকের একটি রচনা।। আবুল আহসান চৌধুরী)


৪. ‘দুঃখময়ী শ্যামবর্ণ রাত’-নামটি আকর্ষণীয় এবং ত্বারিৎ বেড়ে চেতনায় একটি দোলা দেয়। রাত দুঃখময়ী এবং শ্যামবর্ণ। আমরা নিকষ কালো, তমিস্রঘন, রজনী শাওনঘন, ঘোর যামিনী, মাধবী রাত, নীল হাওয়ার রাত, আঁধারিয়া রাতি প্রভৃতি বিশেষণ ও রূপকে রাতকে কবিতায় সরব হতে দেখি, রকিবুল হাসান শ্যামবর্ণ রাতের প্রসিদ্ধি ব্যবহার করেছেন। শ্যামের দেহ কালো। দুঃখের রূপ মলিন। ধূসরিমার সঙ্গে যেন দুঃখের মিতালি। বর্তমান কাব্যের কিছু কবিতার নামও চমকে দেয়ার মতো। ভুলবৃষ্টি, ঘাসফড়িং, জোনাকিসন্ধ্যা, একছাদ পৃথিবী, ভাঙাচাঁদ,, মেঘবালিকা এই রূপমণ্ডিত নামগুলো কবিতায় নতুন খোরাক জোগায়। কাজেই আমাদেও স্বীকার করতেই হয় সুষম ও নির্বাচিত শব্দের ব্যবহাওে রকিবুল হাসান সুদক্ষ।..রকিবুল শব্দ সচেতন। শধশর সংযোজনে পারঙ্গম। তাই কবিতার আকৃতি ও প্রকৃতিগত পরিসরেও তাঁকে বৈচিত্র্য সাধনে বাস্তবে দেখি। প্রচলিত কবিতার দেহ থেকে ভিন্নমাত্রার কাব্যদেহ নির্মাণে তাঁর মনোবল লক্ষণীয়।

(দুঃখময়ী শ্যামবর্ণ রাত: পরিগঠন ও পরিচর্যা : অনীক মাহমুদ)


৫.

কবিতায় আধুনিক কবিতার যে বৈশিষ্ট্য; দুর্বোধ্যতা, তা যত দূও সম্ভব কবি এড়িয়ে চলেছেন। কবিতায় মন্সিয়ানা দেখাতে গিয়ে একালের অনেক কবি নান কৌশল অবলম্বন কওে কবিতার ভেতর-বাইওে লতা-জটিল অরণ্যানি ও দুর্জ্ঞেয় রহস্যময়তদার জাল বিস্তার করেন। আমাদেও কবি সে-দলের কেউ নন। তাঁর কবিতা সহজেই বোঝা যায়; কি ভাষায়, কি বক্তব্যে। শব্দপ্রয়োগে তিনি কুশলী শিল্পী। কবিতার ক্যানভাস ও অন্তঃপ্রকৃতি বিবেচনায় এনে তিনি যথাযথ শব্দ প্রয়োগ করেন। পূর্বসূরির দরোজায় হানা দিয়ে এ কালের কবিদের যথেচ্ছা শব্দ, চিত্রকল্প ইত্যাদি অন্ধ অনুকরণের মাধ্যমে গ্রহণ করার যে সিদ্ধ নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে; কবি সে পথ পরিহার করে নিজস্ব শব্দ ও বাণীবিন্যাসের মাধ্যমে তাঁর কথামালা সাজিয়েছেন।

(দুঃখময়ী শ্যামবর্ণ রাত: কবিতার ভুঁইচাপা আঙিনায় নাড়িছেঁড়া টান: অমৃতলাল বালা)


৬.

রকিবুল আঘাত করতে চেয়েছেন পাঠকের চৈতন্যেও মর্মমূলে। সৃষ্টি করতে চেয়েছেন এক গভীর স্থায়ী আবেদন। রচনা করতে চেয়েছেন এক নিবিড় এমপ্যাথি; সেই বিষয়গুলো নিয়ে যেগুলো আমাদেও সামাজিক, রাজনৈতিক সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরম্পরার সাথে মিশে আছে। আর এই আঘাত হানতে গিয়ে অস্ত্রতে কখনৈা করতে হয়েছে শাণিত, কখনো ভোতা, কখরেনা বক্র। সেদিক থেকে রকিবের মিশ্র বয়ানশৈলী সঙ্গত ও সার্থক।

(রবীন্দ্রনাথ, বাঘা যতীন এবং প্রাজ্ঞজন: একটি উত্তর-ঔপনিবেশিক আলোচনা: রাশিদ আসকারী)




প্রাপ্তি বাংলা ম্যাগাজিন


 

Saturday, June 4, 2022

একজন গৃহিনী কেন এতটা বন্দী? ✒️✒️ফারহানা হৃদয়িনী

 একজন গৃহিনী কেন এতটা বন্দী?





✒️✒️ফারহানা হৃদয়িনী 

কেন একজন গৃহিনী মুক্তো আকাশে বিচরণ করতে পারেনা? কেন সে শুধু মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়ে চলার স্বপ্নই দেখে যায়? আমাদেরও নিজের জীবনে সমাজ ও দেশ নিয়ে অনেক কিছু করতে ইচ্ছে হয়,  কিন্তু আমরা গৃহিনী তাই সামাজিক বেড়াজালে বন্দী।  আমরা জীবনে আমাদের নিজের জন্য কোন সময় নাই। নিজের জীবনের উপর নিজের কোন স্বাধীন অধিকার নাই কারন আমরা স্বাবলম্বী নই। আমরা গৃহিনীরা জীবনের প্রতিটা সময় গৃহের পিছনে দিয়ে দেয় কিন্তু আমাদের সেই শ্রমের কোন মূল্যায়ন নাই। কোথাও ফর্ম পূরণ করতে যেয়ে আমরা লিখি পেশা গৃহিনী। এমন একটি পেশা যার কোন বেতন নাই, যাদের আপন কোন অধিকারের ঠিকানা নাই,  তাই গৃহিনী নামক পেশার মানুষরা পরিবার সমাজ এবং দেশে কোন অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারিনা। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় গৃহিনীরা ফকিরের চাইতেও বড় বেশি ফকির। তাদের জীবনের প্রতিটি অর্থনৈতিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য তাদের অন্য কারো দয়ার উপর নির্ভর করতে হয়। আর এই গৃহিনী যখন নিজের যোগ্যতায় কিছু করার চেষ্টা করে তখন তার নিজের পরিবারই তার পায়ে শেকল পরানোর জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠে। তখন তাদের সামনে একটি প্রশ্ন থাকে তুমি সংসার নাকি ক্যারিয়ার চাও?